মা

মা
আনিসুল হক

আনিসুল হকের মা উপন্যাসটি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সত্য ঘটনা নিয়ে লেখা। বাংলা ভাষার পাশাপাশি বইটি দিল্লী থেকে ইংরেজি ভাষায় এবং ভুবনেশ্বর থেকে উড়ে ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। মা উপন্যাসের স্প্যানিশ অনুবাদ করেন AHS Mohammad, এর স্প্যানিশ নাম "লা মাদ্রএ", এই অনুবাদটি প্রকাশিত হয় ২১মে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস মুক্তধারা আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসবে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি সংস্করণ প্রকাশ বইটির জনপ্রিয়তার প্রমাণ করে।
উপন্যাসের কাহিনী মুক্তিযোদ্ধা মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ এবং তাঁর মায়ের জীবন নিয়ে। শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম ছিলেন ঢাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। তিনি ছিলেন আত্মমর্যাদাবান। তাই তার স্বামী যখন দ্বিতীয় বিবাহ করলেন, তখন তিনি তা মেনে নেননি। ছোট্ট আজাদকে নিয়ে শত বিলাসিতা আর প্রাচুর্যের ঘেরাটোপ পেরিয়ে নেমে এসেছিলেন নিজের গড়া যুদ্ধক্ষেত্রে। সেই যুদ্ধের তিনি ছিলেন সফল যোদ্ধা। অভাব অনটনকে পেছনে ফেলে নিজ হাতে তিনি মানুষের মত মানুষ করে তুলেছিলেন আজাদকে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আজাদ তাঁর বন্ধুদের সাথে যোগ দেয়। ঢাকায় ক্র্যাক প্লাটুনের দলে তিনি ছিলেন। এই গেরিলা দলটি তৎকালীন সময়ে “হিট এন্ড রান" পদ্ধতিতে অসংখ্য আক্রমণ পরিচালনা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক ত্রাসের সঞ্চার করে। ১৯৭১ সালের ২৯ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী রেইড চালিয়ে ক্র্যাক প্লাটুন এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যায়। আজাদের বাড়িতেও রেইড হয়, আজাদ তাঁর সহযোদ্ধাদের সাথে ধরা পড়েন। পাকিস্তানিরা তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করে তথ্য জানতে চায়। প্রচণ্ড অত্যাচারের মাঝেও তারা আজাদের মুখ থেকে কিছু বের করতে পারে না। তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম-ধাম ইত্যাদি বলে দেয়, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। আজাদের মা ছেলেকে বলেন কিছুই না বলতে। আজাদ বলে, মা দুদিন ভাত খাই না, ভাত নিয়ে এসো। মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন বন্দিশিবিরে, কিন্তু ছেলের দেখা মেলে না। আজাদের মা আর কোনোদিনও জীবনে ভাত খাননি। যুদ্ধের ১৪ বছর পরে মা মারা যান, নিঃস্ব, রিক্ত-বেশে। মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে কবরে শায়িত করলে আকাশ থেকে ঝিরঝির করে ঝরতে থাকে বৃষ্টি। বইটির ইবুক তৈরি করেছেন, আমার বইয়ের অন্যতম এডমিন, শিশুকিশোর ডট অর্গ-এর এডমিন শিশির শুভ্র
+