ট্রুথ লাভ এন্ড এ লিটল ম্যালিস

খুশবন্ত সিং এর আত্মজীবনী 
ট্রুথ লাভ এন্ড এ লিটল ম্যালিস 
অনুবাদ - আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু

বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে খুশবন্ত সিং সুপরিচিত এবং লেখক হিসেবে অত্যন্ত সমাদৃত। তার লিখা পড়তে শুরু করলে আর থেমে থাকার উপায় থাকে না। পঞ্চাশ বছরের অধিক সময় ধরে তিনি একটানা লিখে যাচ্ছেন। লেখক, সাংবাদিক ও সম্পাদক হিসেবে তার দৃষ্টিভঙ্গি বরাবর প্ররোচনামূলক ও বিতর্কিত। কিন্তু লিখা গভীর চেতনায় সমৃদ্ধ এবং আবেদনপূর্ণ। সর্বোপরি খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও তিনি সততা থেকে বিচ্যুত হননি এবং আরো গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, পাঠকদের কখনো বঞ্চিত করেননি। তার আত্মজীবনী আসলে তার জীবন ও কাজের উপর লিখা একটি বিবরণ। ১৯১৫ সালে বিভাজন-পূর্ব পাঞ্জাবে জন্মগ্রহণকারী খুশবন্ত সিং আধুনিক ভারতের ইতিহাসের অধিকাংশ প্রধান ঘটনার প্রত্যক্ষদশী। উপমহাদেশের বিভক্তি ও স্বাধীনতা থেকে শুরু করে ভারতের জরুরি অবস্থা, স্বর্ণমন্দিরে উগ্র শিখদের বিরুদ্ধে পরিচালিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর অপারেশন ব্লু স্টার’ এবং তার পরিণতি দেখেছেন খুব কাছে থেকে। ইতিহাসের গতি পরিবর্তনকারী এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত বহু নেতার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল। তিনি জওহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধীর মতো নেতা, সন্ত্রাসী জনাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালে, মেধাবী ও কেলেংকার সৃষ্টিকারী চিত্রশিল্পী অমৃতা শেরগিল এবং উপমহাদেশ বিভক্তির সময় কসাই এ পরিণত মানুষদের সম্পর্কে লিখেছেন তার কাছে কাংক্ষিত স্বচ্ছতা ও অকপটতায় । নিজের জীবন সম্পর্কেও খুশবন্ত সিং অবিচলিত স্পষ্টতায় লিখেছেন। আইনজীবী, সাংবাদিক, লেখক এবং পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে পেশাগত সাফল্য ও ব্যর্থতার কথা লিপিবদ্ধ করেছেন । ষাট বছরের বেশি সময়ের দাম্পত্য জীবনের আনন্দ ও হতাশার কথা বলেছেন। রাজনীতি ও সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত বহু ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অজানা সত্য তুলে ধরায় সংশ্লিষ্টরা যে ক্ষুব্ধ হবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই এবং এই ক্ষুব্ধতার শিকারে পরিণত হয়েছিল তার আত্মজীবনী টুথ লাভ এন্ড এ লিটল ম্যালিস। তা না হলে এটি প্রকাশিত হতো ১৯৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে। ছয় বছর আগে লিখিত গ্রন্থটি আলোর মুখ দেখার ঠিক আগে এর একটি অংশ এক সাময়িকীতে প্রকাশ পাওয়ার পর ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর পুত্রবধূ মানেক গান্ধী তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুন্ন হওয়ার অভিযোগ তুলে খুশবন্ত সিং ও তার প্রকাশকের বিরুদ্ধে মমলা করেন। মামলা চুড়ান্ত রায় ঘোষিত হয়ার পর গ্রন্থটি গত ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০০২ প্রকাশিত হয়।
+